ঢাকাTuesday , 26 November 2024
  1. অপরাধ
  2. অর্থনীতি ও বানির্জ্য
  3. আইন আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. কৃষি ও প্রকৃতি
  6. খেলাধুলা
  7. গণমাধ্যম
  8. গ্রাম বাংলা
  9. চাকরী
  10. জাতীয়
  11. দূর্ঘটনা
  12. ধর্ম
  13. নারী ও শিশু
  14. নির্বাচন
  15. ফটো গ্যালারী

নৈরাজ্যে ইন্ধন পলাতকদের

dainikdinerpordin
November 26, 2024 11:57 am
Link Copied!

ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর ঢাকায় ধারাবাহিক নৈরাজ্য চলছেই। বিভিন্ন শ্রেণি, পেশার লোকজন ও সংগঠন দাবি আদায়ে বিক্ষোভসহ তুচ্ছ ঘটনায় ভয়াবহ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়াচ্ছে। সময় যত গড়াচ্ছে, নৈরাজ্য তত বাড়ছে। রিকশাচালকরাও অচল করে দিচ্ছে ঢাকার বিভিন্ন এলাকা। সবশেষ কয়েকটি কলেজ শিক্ষার্থীদের পরস্পরের মধ্যে ধারাবাহিক সংঘর্ষে প্রতিষ্ঠানও ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। হামলার আগাম ঘোষণা এলেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ঠেকাতে ব্যর্থ হচ্ছে।

বাহিনীর নিষ্ক্রিয়তার পাশাপাশি দ্রুত সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে ব্যর্থতায় দিন দিন নৈরাজ্য বাড়ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। অভিযোগ রয়েছে, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার বিরুদ্ধে হামলাকারীরা সামাজিক মাধ্যমে ইন্ধনের পাশাপাশি মাঠে থেকেও হামলা-নৈরাজ্যে অংশ নিচ্ছে।

সমাজ ও অপরাধ বিশেষজ্ঞ ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. তৌহিদুল হক বলেন, দাবি-দাওয়া থাকতেই পারে। কিন্তু এ নিয়ে যে নৈরাজ্য ও ভোগান্তি হচ্ছে, সে বিষয়ে সরকারের সতর্ক হওয়া উচিত। মানুষকে জিম্মি করে দাবি আদায়ের কৌশল দীর্ঘদিনের। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুরে অন্য কোনো ইন্ধন বা প্রভাব আছে কিনা খতিয়ে দেখা উচিত। এভাবে চলতে থাকলে আতঙ্ক তৈরি হবে। মানুষ রাস্তায় বের হওয়ার আগে দুশ্চিন্তা নিয়ে বের হতে হচ্ছে। এটা তারা ভালোভাবে নিচ্ছে না।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিষয়ে তৌহিদুল হক বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানে এমনিতেই পুলিশের নৈতিক অবস্থান ভেঙে পড়েছে। এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কিছু উপস্থাপন হলে সেখানে বিচার শুরু হয়ে যায়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কাজে লাগাতে হলে পুলিশের ওপর ব্যক্তি আক্রমণ বন্ধ করতে হবে।

পুরান ঢাকার সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও কবি নজরুল কলেজে ভাঙচুরের ঘটনায় গতকাল ঘোষণা দিয়ে ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজে (ডিএমআরসি) ভয়াবহ হামলা-ভাঙচুর চালানো হয়। সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, এক দিন আগে হামলার ঘোষণার পরও সরকার প্রতিরোধে শক্ত ব্যবস্থা নেয়নি। দুপুর থেকে মোল্লা কলেজে নির্বিঘেœ ভাঙচুর চালাতে দেখা গেছে। তাদের আটকাতে পুলিশের তেমন ভূমিকা লক্ষ্য করা যায়নি। বিক্ষুব্ধরা মাইকিং করে ভাঙচুর চালায়। আগে থেকে ব্যবস্থা নিলে পরিস্থিতি এতদূর গড়াত না।

ডিএমআরসি কলেজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশরাফ সামীর জানান, গত রবিবার রাতে কলেজের প্রিন্সিপাল ও চেয়ারম্যান পুলিশের কাছে সহযোগিতা চেয়েছিলেন। কিন্তু পুলিশ আশানুরূপ সহযোগিতা করেনি। যদি প্রশাসন সহযোগিতা করত তাহলে এই ভয়াবহ অবস্থা হতো না। শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা জানান, কলেজের প্রতিটি ডিপার্টমেন্ট, ল্যাব সোহরাওয়ার্দী ও কবি নজরুল কলেজ শিক্ষার্থীরা এসে তছনছ করেছে। এর জন্য পুরোপুরি দায়ী আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তারা কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে তামাশা দেখেছে।

তবে ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, ঘোষণার পর থেকে পুলিশ সতর্ক অবস্থানে ছিল। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছে পুলিশ।

এদিকে, সংঘর্ষ-সহিংসতার মধ্যেই বিনাসুদে এক লাখ থেকে কোটি টাকার ঋণের প্রতিশ্রুতি দিয়ে পাবনা, কুষ্টিয়া, মানিকগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে গতকাল শত শত মানুষকে ঢাকায় আনা হয়। ‘অহিংস গণ-অভ্যুত্থান বাংলাদেশ’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান তাদের ঢাকায় নিয়ে আসে। ডিএমপির রমনা বিভাগের ডিসি মাসুদ আলম বলেন, কথিত সংগঠনের প্রধানসহ ১৯ জনকে আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে নাশকতার চেষ্টাসহ বিভিন্ন অভিযোগ আনা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, সমাবেশে নাশকতা করে আন্তর্জাতিক মহলে দেখানোর চেষ্টা ছিল দেশের সাধারণ মানুষ এই সরকারকে চায় না। ঢাকার অচল করে দেওয়ারও পরিকল্পনা ছিল। তাদের কার্যক্রম নৎসাৎ করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

অন্যদিকে, কয়েক দিন ধরে চলা ধারাবাহিক বিক্ষোভ-অবরোধের অংশ হিসেবে গতকালও আগারগাঁওয়ে রাস্তা বন্ধ করে অবস্থান নেয় রিকশাচালকরা। এতে পুরো এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর প্রথম কয়েক দিনে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন এলাকার রাস্তায় ও সচিবালয়ের সামনে বিক্ষোভ-সংঘর্ষ ব্যাপকভাবে আলোচনায় আসে। এরপর গত ২৬ আগস্ট থেকে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার আশপাশ ও সচিবলায়ের সামনে যেকোনো ধরনের সভা, সমাবেশ, মিছিল, শোভাযাত্রা, বিক্ষোভ প্রদর্শন নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। এর পরও বিভিন্ন দাবিতে এলাকাভিত্তিক রাস্তা বন্ধ করে দেওয়ার ঘটনা ঘটছিল। এর মধ্যেই নতুন করে আলোচনায় আসে সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন। এরপর ঢাকা কলেজ ও সিটি কলেজের শিক্ষার্থীদের কয়েক দফা সংঘর্ষ হয়। ঢাকার তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে আন্দোলন শুরু করে সড়ক ও ট্রেনপথ অবরোধ করে পাথর নিক্ষেপ করা হয়। তিতুমীর কলেজ শিক্ষার্থীদের আন্দোলন স্থগিতের পর আলোচনায় এসেছে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের আন্দোলন। তারা গত কয়েক দিন ধরে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে জমায়েত হয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়ায় ব্যাপক দুর্ভোগে পড়ে মানুষ। গত বুধবার রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর দয়াগঞ্জ, মিরপুর, কল্যাণপুরসহ বিভিন্ন স্থানে সড়ক অবরোধ করেন তারা। পরের দিন বৃহস্পতিবার ঢাকার মহাখালী, আগারগাঁও ও মাজার রোড এলাকায় অবরোধ করা হয়। এ ছাড়া গত রবিবার দিবাগত রাতে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকায় ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ও বাংলাদেশ টেক্সটাইল ইউনিভার্সিটির (বুটেক্স) শিক্ষার্থীদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়।

শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে পুলিশের ভূমিকার ব্যাখ্যা দিয়ে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ তার ফেসবুক পেজে লেখেন- অ্যাগ্রেসিভনেস ও প্রস্তুতি দেখে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও স্ট্রিক্ট অ্যাকশনে যায়নি। কোনো প্রকার অ্যাকশনে গেলেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং ছাত্রদের মধ্যে সংঘর্ষ ও রক্তপাত হতো।

অন্যদিকে, রাজপথ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উত্তপ্তের ঘটনায় ইন্ধন জোগানোর অভিযোগ উঠেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন পোস্ট ও ভিডিও শেয়ার করে নৈরাজ্যের উসকানি দেওয়া হচ্ছে। গতকাল বিকালে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের জগন্নাথ বিশ^বিদ্যালয় শাখার সভাপতি ইব্রাহিম ফরাজি তার ফেসবুক পেজে লিখেছেন, ‘আমরা সাবধান করলেও উসকানি হয়ে যায়। এই যে কতগুলো মায়ের বুক খালি হলো, এই দায়ভার কে নেবে? ইতোমধ্যেই ১১ জন নিহত হওয়ার খবর পেলাম।’

তবে ডিএমপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল কলেজ ও ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে হওয়া সংঘর্ষে কেউ নিহত হয়নি। অপপ্রচার থেকে সবাইকে বিরত থাকার অনুরোধ করেছে ডিএমপি।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।