সিরিয়ায় আসাদ পরিবারের ৫৪ বছরের স্বৈরশাসন শেষ হয়েছে। বিদ্রোহীরা সিরিয়াকে ‘মুক্ত’ ঘোষণা করে বলছে, ‘অত্যাচারী’ প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ পালিয়েছেন।
হায়াত তাহরির আল শাম (এইচটিএস) টেলিগ্রামে বলেছে, একটি অন্ধকার যুগের সমাপ্তি হয়েছে এবং নতুন যুগের সূচনা হলো।
বিদ্রোহীরা বলেছে, আসাদ সরকারের অর্ধ শতাব্দীর শাসনামলে বাস্তুচ্যুত ও কারাগারে বন্দী লোকেরা এখন ঘরে ফিরতে পারবে। এটি হবে একটি ‘নতুন সিরিয়া’ যেখানে ‘সবাই শান্তিতে বসবাস করবে এবং ন্যায়বিচারের বিজয় হবে’।
সিরিয়ার ১৩ বছরের গৃহযুদ্ধে সাড়ে ৩ লাখের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। লাখ লাখ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। দেশটিকে গোটা বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছিলেন বাশার আল আসাদ।
এক নজরে সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ
মার্চ ২০১১ : দামেস্ক ও দারায় শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ শুরু হয়। আসাদ সরকার সহিংস আচরণের মাধ্যমে এর প্রতিক্রিয়া জানায়। যার ফলে সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু হয়।
জুলাই ২০১২ : আলেপ্পোতে যুদ্ধ তীব্র আকার ধারণ করে। বিরোধী বাহিনী শহরের বড় অংশ দখল করে। এর চার বছর পর সিরীয় সেনাবাহিনী এটি পুনরুদ্ধার করে।
আগস্ট ২০১৩ : পূর্ব ঘোতায় রাসায়নিক অস্ত্রের মাধ্যমে শত শত বেসামরিক লোক হত্যা করে আসাদ সরকার। এই হামলা আন্তর্জাতিক নিন্দার ঝড় উঠে। সিরিয়া তার রাসায়নিক অস্ত্রের মজুদ ধ্বংস করতে রাজি হয়।
জুন ২০১৪ : সিরিয়া ও ইরাকের বিশাল এলাকা দখলের পর খিলাফত ঘোষণা করে আইএসআইএল। সিরিয়ার রাক্কা শহরকে রাজধানী ঘোষণা করা হয়। তাদের রাজত্ব ২০১৯ পর্যন্ত স্থায়ী হয়।
সেপ্টেম্বর ২০১৫ : বাশার আল-আসাদের সমর্থনে রাশিয়া সরাসরি সামরিক হস্তক্ষেপ শুরু করে। রাশিয়ার বিমান হামলা সরকারি বাহিনীর পক্ষে মোড় ঘুরিয়ে দেয়।
এপ্রিল ২০১৭ : খান শেকুনে রাসায়নিক অস্ত্র হামলার চালায় সিরিয়া। এর প্রতিক্রিয়ায় সিরিয়ার সরকারি লক্ষ্যবস্তুতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার মাধ্যমে যুদ্ধে জড়ায় যুক্তরাষ্ট্র। এটি ছিল আসাদের বাহিনীর বিরুদ্ধে মার্কিন বাহিনীর সরাসরি প্রথম সামরিক পদক্ষেপ।
নভেম্বর ২০২৪: গত চার বছর ধরে সংগঠিত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো গত সপ্তাহে ইদলিব থেকে একটি অভিযান শুরু করে।
ডিসেম্বর ২০২৪ : প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ পালিয়ে যাওয়ার মাধ্যমে সিরিয়ার একটি গোষ্ঠীর শাসক ক্ষমতার অবসান হয়।