সবুজ ঘাসে শিশির বলছে আসছে শীত
ছবি : সংগৃহীত
আশ্বিনের মাঝামাঝি থেকে দেশের আবহাওয়া কিছুটা শীতের আমেজ বয়ে এনেছে। ভোরবেলা সবুজ ঘাসে জমে থাকা এসব শিশির কণায় যখন সূর্যের আলো পড়ে। তখন শিশিরদানাগুলো দেখতে মুক্তার মতো জ্বলজ্বল করে।
এমন আবহ জানান দিচ্ছে, শীত এসেছে। সকালে কুয়াশা ভেদ করে যখন পূব আকাশে সূর্যের উদয় হয় তখন শিশির বিন্দুগুলো ঝিকমিক করে।
শুক্রবার (৩ নভেম্বর) সকালে রূপগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, উত্তর থেকে মৃদু ঠান্ডা হওয়া বইতে শুরু করেছে। ঘাস কিংবা ধানের কচি পাতায় মুক্তার দানার মতো জমেছে বিন্দু বিন্দু শিশির। সেই সঙ্গে হালকা কুয়াশা ঘেরা প্রকৃতি আর ভোরের শিশির জানান দিচ্ছে শীত আসছে।
শীতের সময় অতিথি পাখিদের অস্থায়ী নিবাসে পরিণত হয় বাংলাদেশ। তীব্র শীতের থেকে বাঁচতে তারা আশ্রয় নেয় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। এসময় বাহারি রঙের অতিথি পাখিদের আনাগোনা শুরু হয়।
শীতকালে অতিথি পাখিদের কলকাকলিতে মুখরিত হয় চারপাশ। গাংচিল পানকৌড়ি, চ্যাখা, টিকি হাঁস, সোনাজঙ্গ, খুরুলে, কুনচুষী, বাতারণ, শাবাজ, জলপিপি, ল্যাঞ্জা, হরিয়াল, দুর্গা, টুনটুনি, রাজশকুন, লালবন মোরগ, তিলে ময়না, রামঘুঘু, জঙ্গি বটের জানা-অজানা অসংখ্য অতিথি পাখি চারপাশে ঘুরে বেড়ায়।
বিশেষ করে শীতকালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় গেলেই অতিথি পাখিদের দেখা মেলে। বিভিন্ন এলাকার পর্যটকরা আসেন এখানে। এক পলক দেখতে কিংবা পাখিদের সঙ্গে ছবি তুলতে পাখিপ্রেমীরা ছুটে চলে যান সাভারের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে।
শীত এলে বাংলার ঘরে ঘরে নানা রকমের পিঠা তৈরি হয়। চিতই পিঠা, দুধচিতই, ছিট পিঠা, দুধকুলি, ক্ষীরকুলি, তিলকুলি, পাটিসাপটা, ফুলঝুড়ি, ধুপি পিঠা, নকশি পিঠা, মালাই পিঠা, মালপোয়া, পাকন পিঠা, ঝাল পিঠা ইত্যাদি। বাংলাদেশে শতাধিক ধরনের পিঠার প্রচলন রয়েছে। শীত এলে অতিথি আপ্যায়নে বেশিরভাগ ঘরেই পিঠা তৈরি করা হয়।
এদিকে শীতের সঙ্গে সঙ্গে আগাম সবজি চাষ নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন প্রান্তিক চাষিরা। মুলা, ফুলকপি, বাঁধাকপি, শিম, লাউ, টমেটো, লালশাকসহ বিভিন্ন শীতকালীন সবজির আগাম চাষাবাদ করেছেন। এ বছর আগাম শীত এসে যাওয়ায় অনেকের আশঙ্কা, পুরো শীত মৌসুমে এর তীব্রতা বেড়ে যাবে।
গ্রাম বাংলার নদ-নদী অববাহিকার আর গ্রামীণ জনপদ সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত হালকা কুয়াশা জানান দিচ্ছে শীত এসেছে।