জেলহত্যা দিবস উপলক্ষ্যে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্য রাখছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ছবি: সংগৃহীত
ওরা (বিএনপি) জানে, নির্বাচন করলে ওরা কোনোদিন ক্ষমতায় আসতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
|আরও খবর
রাজধানীতে পুলিশ হত্যা: সুনামগঞ্জের যুবদল সভাপতি গ্রেপ্তার
সরকারকে পদত্যাগের আল্টিমেটাম দিল ইসলামী আন্দোলন
মির্জা ফখরুলের মুক্তি চেয়ে ৬৭ বিশিষ্ট নাগরিকের বিবৃতি
তিনি বলেন, বিএনপি কাকে নিয়ে নির্বাচন করবে? নির্বাচন করলে তাদের নেতা কে? কাকে প্রধানমন্ত্রী করবে? কাকে দিয়ে মন্ত্রিসভা করবে? বিএনপি চেয়ারপারসন, সে তো এতিমের টাকা আত্মসাতের মামলায় সাজাপ্রাপ্ত। আর এখন তো অসুস্থ। ২০১৮ নির্বাচনে তো মাত্র ২৯টা সিট পেয়েছিল। এখন তাদের অপকর্মের জন্য মানুষ আরও বিমুখ।
শুক্রবার (৩ নভেম্বর) জেলহত্যা দিবস উপলক্ষ্যে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আলোচনা সভাটি অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিদেশিদের লাফালাফিতে এদেশে নির্বাচন বানচাল হবে না। নির্বাচন সঠিক সময়েই হবে। সামনে নির্বাচন। বহু ষড়যন্ত্র হবে নির্বাচন বানচালের। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থেকে ভোটের প্রস্তুতি নিতে হবে। যাকে মনোনয়ন দেওয়া হবে তার পক্ষেই কাজ করতে হবে।
বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেবে কিনা সেটি নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন সরকারপ্রধান। বলেন, অগ্নিসন্ত্রাসীরা নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করতে চাইলে তাদের রুখে দাঁড়াতে হবে।
তিনি বলেন, আমাদের কোনো মুরুব্বি নেই। আমাদের আছে বাংলাদেশের জনগণ। তাদের নিয়েই আমাদের এগোতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ বিএনপির যে অগ্নিসন্ত্রাস, তাদের যে বীভৎস চেহারা, তারা যে পিটিয়ে পিটিয়ে পুলিশ হত্যা করে, একজন নিরীহ পুলিশ চাকরি করে, তার কি অপরাধ ছিল? তাকে ওইভাবে, অমানবিকভাবে হত্যা করল। ২০১৩ সালে ঘটিয়েছে, ২০১৪ সালের নির্বাচন বানচাল করার জন্য একই ঘটনা ঘটিয়েছে। ২০১৫ তে ঘটিয়েছে। হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করা, আগুনেও পোড়ানো, হাজার হাজার গাছ কেটে রাস্তা কেটে একটা ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছিল। বাংলাদেশের জনগণ যখন প্রতিরোধ করেছিল তখনই তারা থেমেছে।
তিনি বলেন, এখন আমি বলব সময় এসে গেছে, এই অগ্নিসন্ত্রাসীরা যে যেখানে থাকুক, যারাই এভাবে আগুন দেবে, জনগণের ওপর অত্যাচার করবে, গাড়ি-বাস-ট্রাকে আগুন দেবে, সঙ্গে সঙ্গে তাদের প্রতিরোধ করতে হবে। কারো ওপর নির্ভর করলে হবে না, জনগণকে এগিয়ে আসতে হবে।
ফিলিস্তিনে ইসরাইলি হামলার নিন্দা না জানানোয় বিএনপি-জামায়াতের সমালোচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের মানুষ কতটা দুর্দশার মধ্যে আছে। হামলায় কত মানুষ মারা যাচ্ছে। নারী-শিশুরাও রক্ষা পাচ্ছে না। এ বিষয়ে তারা চুপ করে আছে। তাদের কোনো প্রতিবাদ দেখেছেন?
প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন রেখে বলেন, তারা কাদের পদলেহন করে বাড়াবাড়ি করছে? তারা কাদের স্বার্থ দেখে, এটাই আমার প্রশ্ন।
ফিলিস্তিনিদের সমর্থনের কথা পুনর্ব্যক্ত করে তিনি বলেন, আমরা ফিলিস্তিনের সাধারণ মানুষের জন্য সাহায্য পাঠিয়েছি। তাদের স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পক্ষে আমাদের অবস্থান।
সরকারপ্রধান বলেন, জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৪৮ সাল থেকে মাতৃভাষায় কথা বলার অধিকারের যে আন্দোলন সূচনা করেছিলেন, তারই পথ বেয়ে জাতির পিতার নেতৃত্বে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করি। জাতির পিতার নির্দেশে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালিত হয়, স্বাধীনতা অর্জন হঠাৎ করে হয় না। দীর্ঘ ২৩ বছরের সংগ্রাম আর ৯ মাসের মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমাদের বিজয় অর্জন। তার জন্য অনেক সংগ্রাম, অনেক রক্ত, ত্যাগ আমাদের করতে হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭৫ সালে ৩ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কেন্দ্রীয় কারাগারে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল আমাদের জাতীয় চার নেতাকে। কারাগার সবচেয়ে সুরক্ষিত জায়গা, এই কারাগারই ঢুকে নির্মমভাবে হত্যাকাণ্ড চালায়। আমি তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই।
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শাহজাহান খান, মোফাজ্জল হোসেন মায়া বীরবিক্রম, সিমিন হোসেন রিমি, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, কার্যনির্বাহী সদস্য ডা. মুশফিক হোসেন চৌধুরী, সৈয়দ নজরুল ইসলামের মেয়ে ডা. সৈয়দা জাকিয়া নূর লিপি এমপি, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান।
অনুষ্ঠানের শুরুতে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ এবং উপ-প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ আব্দুল আউয়াল শামীম যৌথভাবে আলোচনা সভার সঞ্চালনা করেন।