বক্তব্য দিচ্ছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম
যারা আওয়ামী লীগের সময়ে মানুষের কল্যাণে নেওয়া বিভিন্ন মেগা প্রকল্পের সমালোচনা করে তাদের উদ্দেশ্যে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, ইতিহাস সাক্ষী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জন্মই হয়েছে এদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য। একটা সময় যখন পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকদের দ্বারা এদেশের মানুষ অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছিল সে বঞ্চনার উত্তরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলার মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে সেই অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছিলেন। ফলশ্রুতিতে ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করি। বঙ্গবন্ধু যখন যুদ্ধ বিধ্বস্ত একটি দেশকে পুনর্গঠনের কাজে হাত দিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়েছিলেন তখন ঘাতকের নির্মম বুলেট কেড়ে নেয় তার প্রাণ। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে ষড়যন্ত্রকারীরা বাংলাদেশের উন্নয়ন যাত্রাকে স্তব্ধ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু তার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সামনের দিকে এগিয়ে চলেছে। মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তনে বিভিন্ন মেগা প্রজেক্ট সেজন্যই নেওয়া হয়েছে। অথচ বিএনপি’র নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ সারাক্ষণ মেগা প্রকল্পের নামে মেগা দুর্নীতি হয়েছে বলে মানুষকে বিভ্রান্ত করছেন। অথচ বিএনপি নিজেদের সময় হাওয়া ভবনের মাধ্যমে হাওয়ার উপর দুর্নীতি করত, কোনো প্রকল্পের বাস্তবায়ন না করেই।
তিনি আজ লাকসামে বঙ্গবন্ধু পৌর অডিটোরিয়ামে লাকসাম উপজেলার রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সাথে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন লাকসাম উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট ইউনুস ভূঁইয়া এবং আরো উপস্থিত ছিলেন লাকসাম পৌরসভার মেয়র অধ্যাপক আবুল খায়ের।
স্থানীয় সরকারমন্ত্রী এ সময় কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনসহ বৃহত্তর কুমিল্লা অঞ্চলের উন্নয়নে নেওয়া বিভিন্ন প্রকল্পের কথা উল্লেখ করে বলেন, একটা সময় এক বা ২ কোটি টাকার কোন উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ পেতে স্থানীয় সংসদ সদস্যদের অপেক্ষা করা লাগতো আর এখন কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও চাঁদপুরের উন্নয়নে এক হাজার কোটি টাকার উপরে প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এছাড়া কুমিল্লাসহ নোয়াখালী অঞ্চলে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের জন্য কুমিল্লা ওয়াসা স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আজকে শুধু কুমিল্লায় নয়, সারা বাংলাদেশের গ্রামীণ রাস্তাঘাট অবকাঠামো উন্নয়নে ব্যাপক কাজ করা হয়েছে যার সুফল সমগ্র দেশের মানুষ এখন ভোগ করছে।
মো. তাজুল ইসলাম এ সময় একটি পরাশক্তির মানবাধিকার ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার দ্বিমুখী নীতির সমালোচনা করে বলেন, ফিলিস্তিনে যখন হাজার হাজার নিরীহ শিশু এবং নারী হত্যা করা হয় তখন মানবাধিকারের প্রশ্ন কেন উত্থাপিত হয় না। হাসপাতালে বোমা মেরে যখন অসুস্থ মানুষদেরকে মেরে ফেলা হয় তখন কেন মানবাধিকার নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে। মন্ত্রী এ সময় বাংলাদেশের জনগণই বাংলাদেশের রাজনীতি এবং গণতন্ত্রের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবে বলে জানান।
মন্ত্রী বলেন,পদ্মা ব্রিজ, রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, কর্ণফুলী টানেল, এক্সপ্রেস ওয়ে, মেট্রোরেল, মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ কেন্দ্র এসবই দেশের অর্থনীতির গতিকে সচল করার জন্য নেয়া হয়েছে যার সুফল এরই মধ্যে মানুষ ভোগ করছে এবং আগামীতে এসব প্রকল্পের ফলে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ত্বরান্বিত হবে। এ সময় উন্নয়নের এ ধারা বজায় রাখতে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধভাবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে জয়যুক্ত করার জন্য তিনি সবাইকে আহ্বান জানান।