প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (সিইসি) পরীক্ষার বৃত্তির ফল মঙ্গলবার প্রকাশ করা হয়েছে। এতে মোট ৮২ হাজার ৪২২ জন বৃত্তি পেয়েছে। একই সঙ্গে প্রকাশ করা হয়েছে পিইসি এবং ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী (ইইসি) পরীক্ষার পুনঃনিরীক্ষণের ফল।
উভয় পরীক্ষায় ৮৪ হাজার ৩৩৯ শিক্ষার্থী ১ লাখ ২০ হাজার ১২৭টি ফল পরিবর্তনের আবেদন করেন। এর মধ্যে ২৭ হাজার ২০৯টি বিষয়ের ফল বিভিন্ন গ্রেডে পরিবর্তন হয়েছে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সংবাদ সম্মেলনে প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন বৃত্তির ফল প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, মেধা কোটায় (ট্যালেন্টপুল) ৩৩ হাজার, সাধারণ কোটায় সাড়ে ৪৯ হাজার শিক্ষার্থী বৃত্তি পেয়েছে। ট্যালেন্টপুলে বৃত্তিপ্রাপ্তরা ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত মাসে ৩০০ টাকা এবং সাধারণ কোটায় ২২৫ টাকা করে অর্থ পাবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, এবার প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী ছাত্রছাত্রীদের সংখ্যার অনুপাতে উপজেলা/থানার কোটা নির্ধারণ করে ট্যালেন্টপুল বৃত্তি বণ্টন করা হয়।
সাধারণ বৃত্তি ইউনিয়ন ও পৌরসভা ও ওয়ার্ডভিত্তিক বিতরণ করা হয়। এবার মোট ৮ হাজার ২৪টি ইউনিয়ন/পৌরসভার ওয়ার্ডে প্রতিটিতে ৬টি (৩ জন ছাত্র ও ৩ জন ছাত্রী) হিসাবে ৪৮ হাজার ১৪৪টি এবং অবশিষ্ট ১ হাজার ৩৫৬টি বৃত্তি হতে প্রতিটি উপজেলা/থানা হতে আরও ২টি (একজন ছাত্র ও একজন ছাত্রী) করে ৫১১টি উপজেলা/থানায় ১ হাজার ২২টি সাধারণ এবং অবশিষ্ট ৩৩৪টি বৃত্তি হতে প্রতিটি জেলা হতে আরও ৪টি (২ জন ছাত্র ও ২ জন ছাত্রী) করে ৬৪টি জেলায় ২৫৬টি সাধারণ বৃত্তি প্রদান করা হয়ে হয়েছে। এছাড়াও পুনঃনিরীক্ষার ফল পরিবর্তন হওয়ায় ৭৮টি বৃত্তি রিজার্ভ রাখা হয়েছে।
জাকির হোসেন বলেন, বৃত্তির ফল ডিপিই’র ওয়েবসাইটে www.dpe.gov.bd-তে প্রকাশ করা হবে এবং স্থানীয়ভাবে বিভাগীয় উপপরিচালকের কার্যালয়/জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় এবং উপজেলা পর্যায়ে পাওয়া যাবে।
উল্লেখ্য, ১৭ নভেম্বর শুরু হয় পিইসি ও ইইসি পরীক্ষায় ২৯ লাখ ৩ হাজার ৬৩৮ জন শিক্ষার্থী অংশ নেয়। এর মধ্যে প্রাথমিক সমাপনীতে ২৫ লাখ ৫৩ হাজার ২৬৭ জন ও ইবতেদায়ি সমাপনীতে ৩ লাখ ৫০ হাজার ৩৭১ জন ছাত্রছাত্রী ছিল।
২৭ হাজার ২০৯ জনের ফল পরিবর্তন : পঞ্চম শ্রেণির সমাপনী-ইবতেদায়ির পুনঃনিরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়েছে। দুটি ধাপে মোট ৮৪ হাজার ৩৩৯ জন ১ লাখ ২০ হাজার ১২৭টি আবেদন করে।
তার মধ্যে ২৭ হাজার ২০৯টি বিষয়ের ফল বিভিন্ন গ্রেডে পরিবর্তন হয়েছে। মঙ্গলবার প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর (ডিপিই) থেকে এ পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়েছে। ডিপিই থেকে জানা গেছে, গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর সমাপনী-ইবতেদায়ি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়।
পরদিন থেকে পরবর্তী ১৫ দিন পুনঃনিরীক্ষার আবেদন কার্যক্রম চলে। ফলাফলে সন্তুষ্ট না হয়ে ১ লাখ ১৩ হাজার ৫১৭টি আবেদন জমা পড়ে। তার মধ্যে বাংলায় ১৬ হাজার ৯৮৯টি, ইংরেজিতে ৩০ হাজার ১৬০, গণিতে ১৮ হাজার ৩৪৩টি, বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচিতি বিষয়ে ১৬ হাজার ৮২২টি, সাধারণ বিজ্ঞানে ১৬ হাজার ৯৯০টি এবং বিজ্ঞান বিষয়ে ১৪ হাজার ২০৪টি আবেদন করা হয়। তার মধ্যে ২৪ হাজার ৭৯০ জনের বিভিন্ন গ্রেডে ফল পরিবর্তন হয়েছে।
অন্যদিকে পঞ্চম শ্রেণির ইবতেদায়িতে ৬ হাজার ৬১০টি আবেদন জমা পড়ে। এর মধ্যে বাংলায় ১ হাজার ৭৮টি, ইংরেজিতে ১ হাজার ৯৯২টি, গণিতে ৪১১টি, বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচিত এবং সাধারণ বিজ্ঞানে ১ হাজার ৭৩৮টি, কুরআন বিষয়ে ৭৪৩টি এবং আরবিতে ১ হাজার ৪৪৮টি আবেদন জমা হয়।